কবিতা

ফোরপ্লে বলতে যা বুঝি

 

অপূর্ব সাহা

 

()

 

এই যে শব্দগুলো নাচে আসলে শব্দকে কেন্দ্র করে ট্রান্সজেন্ডার তারাগুলো কখনো জ্বলে কখনো বা নীরবতার কপাল ছুঁয়ে একজন সারাদিন আমার কাছে এসে সম্ভাবনাময় লোডশেডিং ও কমপ্ল্যান ঘিরে ধরলে আদতে কিছুই তো হবার নেই অক্ষরের মধ্যে হরিনাম ঘোরে ঢেউ হয়ে মানুষের উজ্জ্বল স্বভাব কিছুটা ব্যবহার করার পরে ভেজা কসমোলজি চেটে নিজেকে মেলে দিতে পারি বলে চাঁদেরও ক্যালপল লাগে ব্যাগের মধ্যে পাগল পাগল কমলা লেবু এইসব মামুলি আলাপে শব্দের ভেতর নিজস্ব মঞ্জুশ্রী ফেলে অনেকক্ষএকা একা বাঁধানো প্রণামের কাছে বাবার অতল থেকে কিছুটা শোক খুঁজে নিয়ে ধবধবে ধবধবে ধ্বনিতে কিছুটা মাথামোটা বিকেলের মতো এই ব্যাপ্তিতে যারা যারা জড়িয়ে

 

()

 

এই যে প্রথম লাইনটা কি ভাবে ভাবছি ভাবতে ভাবতে মুসুর ডালের মধ্যে হ্যালো চেক চেক তুমি আমাকে চিরন্তন দিচ্ছো কান্নাকাটি সালফেট দিচ্ছো আমি ভুলে যাওয়া গুছিয়ে রেখে একটি প্রচ্ছন্ন ফ্রিজের সঙ্গে আফ্রিকার কেমেস্ট্রি টের পেতে পেতে তোমার সাথে যেতে পারে এমন সব কিছুই জিভ থেকে রাত্রি অবধি মাত্র পঁয়ত্রিশ টাকায় প্যান্টি থেকে গ্যালাক্সি ছড়িয়ে পড়ছে গ্রিল ধরে বারান্দার কষ্ট ছড়িয়ে পড়ছে এত কম দামের বর্ষাকাল আমার একটুও পছন্দ নয় জানি না প্রবণতাকে গাছের সামনে বসিয়ে জেরা করা ঠিক হবে কিনা মনের দস্তয়েভস্কি হালকা হবে কিনা অশান্তির হাতে লেটার মার্ক্স খোদাই করা হয়েছে শুনে গমগম শব্দটার পাশে মদ খেতে খেতে আমি বাড়ি ফেরার তাড়ায় নৈঃশব্দের থেকেও বড় একটা কবিতা পতৌদি হয়ে উঠছে তালগোল পাকিয়ে পাকিয়ে

 

()

 

তখন কচ্ছপের ডানায় ডানায় বিচ্ছেদের তেমন কিছুই মনে থাকে না যাকে একদম ঠিক ভেবে নিয়ে শব্দের সানগ্লাস পরার মুহুর্তে কচ্ছপের ইলেকট্রন বিন্যাসে জল ঢেলে ঢেলে ডায়জেস্টিভ পর্দার নান্দনিকতায় তোমাকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি না বলে আজকাল লেখাই একমাত্র কাগজের কারণ লিখলেই যেনো দরজায় দরজায় ইডিপাস বাজে অযত্ন বাজে নৌকার পাঠক সংখ্যা এমন কিছুই বাড়ে না তাতে যাতে নৌকাকে ডাক্তার বলা যেতে পারে জানিনা কখন কিভাবে মাথার মধ্যে আনাগোনা নেই পিচকারি নেই তাই বয়স কিনলে একটা বয়স ফ্রি এইসব অনুভূতিতে শেষ পর্যন্ত আয়নারও হাইফেন থাকে কখনো কেউ কেউ সাক্ষী থাকে কখনো আঙুরের না বলা কথাগুলো ঝুলে থাকার ধারণায় একটা ফুটো দুটো চিৎকার জিভ বার করে আমাকে বিচ্ছিন্ন করে চলচ্চিত্রকে বাটার দিয়ে মাখিয়ে দূরে আরো দূরে

 

()

 

কাউকে না জানিয়ে শুভেচ্ছার সমপরিমাণ রাস্তা আর তার থেকে অনেকে বেশি চরমভাবাপন্ন এই ল্যাম্পপোস্ট তুমি পেরিয়ে যেতে যেতে গোটা ব্যাপারটায় আর একটুও না থেমে একমাত্র মিসডকল দিয়ে বানানো পেঁপে গাছের নীচে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে আর যাই হোক না কেন মাধ্যমিক পাশ করা অমলেট বলতে প্লেট কি বলতে চায় সেকথা একটুও চিন্তা না করে এমনও দিন যায় একফোঁটা হাফ প্যাডেল সঙ্গে করে দুই ফোঁটা টাইপিস্ট নিয়ে আকাশের পিটি ক্লাসে সবচেয়ে ভালো মেঘেদের সামনে দাঁড় করিয়ে গণতন্ত্র দিয়ে গোল করতে গিয়ে রাতের বৈশালী ফুরিয়ে গেছে কিনা বাড়ি ফিরে বাড়ির তুলনায় উলঙ্গ যেসব আলো সারা গায়ে মাখতে মাখতে ফুলকো লুচির ড্রাইভার তেলের ভেতর কিভাবে তাকাবে সকলের বাধা নিষেধ অগ্রাহ্য করে নিজেই নিজের স্বভাবে এক সময় অনেক কনিষ্ক পেরিয়ে

 

()

 

আরো একবার এক চামচ লাফিয়ে নামো কেউ কেউ শিশিরের প্রি-ওয়েডিং সেরে ঘাসের চেয়ে বেশি ঘাস হয়ে শুয়ে আছে তুমি তার গায়ে বিব্রত এঁকে হাততালি দিয়ে আঙুরের পাশ মার্ক হাওয়ায় হাওয়ায় কবিতা বলতে যা বোঝায় ভরদুপুর তা নয় খুব জোর শুরু থেকে গোড়া করলে বাঙালী দিগন্তের সামনে স্তনের স্বভাব ছড়িয়ে পড়ুক ড্রাই ফ্রুটের বস্ত্রালয়ের সামনে মানুষের শিরায় শিরায় ঘুরে ফিরে নিঃশ্বাসের গড়নে রিভলভারের আলো আর তার থেকেই সুর আসে সুর থেকে বিকার আসে মনে কি নেই ঝরা পাতারা এখন কোন পার্টি করে কার জন্য সারারাত জেগে জেগে নয়ন বতুতা হয়ে সব আচ্ছন্নতা দিয়ে তোমার কথার আদলে বহুতল গড়ে নিলে এই ভাস্কো দা গামাগুলো নক্ষত্রের কানে চুপিচুপি সবকিছু ভেঙেচুরে

 

 

 

কবি পরিচিতি

 

পূর্ব সাহা গদ্য দিয়ে লেখা শুরু করলেও প্রথম দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে পাকাপাকি ভাবে কবিতায়নিরীক্ষা মূলক আর্টে বিশ্বাসীজন্ম এবং বেড়ে ওঠা পশ্চিমবঙ্গের মালদা শহরেফাউন্টেন পেনের মারাত্মক নেশাআই আই টির প্রাক্তনীফিজিক্স পড়াভালোবাসেন অচেনা গলি ধরে অগোছালো ভাবে হেঁটে বেড়াতে আর সকলের মাঝে আকন্ঠ একা থাকতেলেখালেখি প্রকাশিত হয় মূলতমধ্যবর্তীপত্রিকায়প্রকাশিত কবিতার বই - ছোটো হাতের আকাশ (মধ্যবর্তী)

 

 

সাম্প্রতিক কবিতা ভাবনা

 

নিজের শরীর আর শরীরের বাইরের স্পেসকে লিবারেট করতে গিয়ে দেখেছি কবিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেকারণ লেখা তো নিজের শরীরের সম্প্রসারণশরীরের সম্প্রসারিত অংশনিজের বিড়ম্বিত অস্তিত্বের প্রকাশ ছাড়া কিছুই নয়তাই না লিখলে শারীরিক কষ্ট হয়আসল কথা হলো নিজের যৌনতাকে ভালো করে চিনতে শেখাঅনুশীলনের মাধ্যমে কামনার ভাষা খুঁজে নেওয়াএই কামনা কখনো সরল হতে পারে নাতা জটিল এবং দুর্বোধ্যতায় ভরাসেখানে থাকে অনেক প্রথাবহির্ভূত কামসম্ভারভায়োলেন্সস্বেচ্ছাচারঅতৃপ্তিঅস্থিরতাক্ষিপ্রতাআবার কখনো কখনো নৈঃশব্দওঅন্তরঙ্গতাকে কবিতার ফর্ম হিসাবে আর ভাষায় একটা যৌনপ্রবাহইটস্‌ এ সেলিব্রেশন অফ সেক্সুয়ালিটিকামনার উত্তুঙ্গ শীর্ষবিন্দুগুলোকে যেটা ছুঁতে চায়কামনার তূরীয় বিস্তৃতির মধ্যে দিয়ে বিশৃঙ্খলার মহোল্লাসে এগিয়ে যেতে চায়প্রতিটি শব্দের প্রতিটি বাক্যের যৌন অভিক্ষেপ বিক্ষিপ্ত অথচ সমাহিতবোধ নিয়ে মহাবিশ্বের এনট্রপি বাড়িয়ে সমুজ্জ্বল অযৌক্তিকতায়, মনোবৈকল্যে, এই পৃথিবীর প্রতিটি জীব আর জড়ের কামনার ইতিহাস লিখে যেতে চাই