Homepage 48th Issue Content Editorial Cover Art by Partho Chanda পরিবিষয়ী কবিতা Your Comments Contact Us Books From Kaurab

   

কবিতা

জয়শীলা গুহ বাগচী

===  

 

য়শীলা গুহ বাগচীর জন্ম ১৯৭৬য়ে। ওঁর অনেক কবিতা কৌরব পত্রিকা ও কৌরব অনলাইনে প্রকাশিত।  তরুণতর বাঙালী কবিদের প্রজন্মে জয়শীলার কন্ঠস্বর সহজেই অগ্রগণ্য, অসামান্য এক সারির ওঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দেবদারু অপেরা’ (২০১৩) বহু আলোচিত ও সমাদৃত। দ্বিতীয় বই ‘থার্মোকট’ (২০১৫)। দুটি বইয়েরই প্রকাশক এখন বাংলা কবিতার কাগজ। এ সংখ্যার পাঁচটি কবিতা সাবলীল স্বকীয়তায় শানানো এক রোদেলা সম্ভার। ব্যক্তির সাথে সমাজের যে সেতু সেখানে জয়শীলার যাতায়াত স্বচ্ছন্দ, ও বুদ্ধিদীপ্ত সরস।    

 

আত্মঘাতী

(১)

 

এলানো ক্লিভেজ থেকে কানে

গড়িয়ে নামছে তরল অন্ধকার

নদীর আঁচল নেই গায়ে

মাঘী আঁশ ছিল কিছু

বাকিটা তেলতেলে ক্লডিয়াস

জাস্ট ভীট ইট

কেনই বা নয়

ক্লাব আর লোকাল কমিটির কমপ্ল্যান দেখে

অন্তর্বাস হয়ে উঠল আমার সকল কাঁটা

প্রেত উড়ে এল

দেওয়াল জুড়ে এল

এই নষ্ট বেকারি

প্রেত উড়তে থাকে

ফুলতে থাকে

বার বার বার বার

বার ললনার গায়ে বিয়োনোর ভান

 

(২)

 

ডাকনাম পায়জামা হতে পারে

পায়জামা নামে স্বপ্নের ভেতর

সৌজন্য চিটচিট করছে

কতটা সময় লাগে চক্রব্যূহে?

গা থেকে কতটা হ্যাম ঝরালে

পরবর্তী উস্কানী নিজের মনে হয়

তোমার কী ব্রেন নাই কুসুম?

শুধু মা আছে!

যে অন্তরীক্ষে প্রকৃত অন্তর ধূলোবালি

সেখানে বিয়ে হয়নি কখনো

রক্তের মত গড়িয়ে নেমেছে প্রস্রাব

চেয়ারে চেয়ারে উলুধ্বনির ভান

 

 

(৩)

 

একটা ঝোড়ো হাওয়া

পাশে পাশে অক্লান্ত সন্দেহ

দোলনায় দোদুল

হেজে মজে যাওয়া রাস্তার পাশ থেকে

ওফেলিয়া চৌচির

পাশ বালিস পড়ে আছে মৃদু

চপ্পল ফুলছে

ফুলছে

চাপা পড়ছে বশ্যতা

তারও নীচে রক্তাভ চুরুট

স্বপ্নিল আগুন

 

 

(৪)

 

বই হতে চাওয়া কিছু টুথব্রাশ

আরও অন্তর্নিহিত হয়

যেটুকু আবেগ চিবিয়েছিল

ধুয়েও ফেলেছিল কাগজ

এবার হড়কা নেমে আসছে যেন

 

মা এর জরায়ু ছিঁড়ে এনে

নিজস্ব পেনাল কোডে

সাম্রাজ্যে থাকে হ্যামলেট বৃন্দ

মারা যায়

বেঁচে ওঠে

আবেগময় বসন্ত সেসব

 

(৫)

 

নির্বিচার ছড়িয়ে যাচ্ছে যেন

ক্রমশ আত্মিক হয়ে উঠছে বিষ

কানের ভেতর দিয়ে মরমে

মৃত কোরাস ছড়িয়ে পড়ছে

রাজা গড়ে উঠছে

রাণী গড়ে উঠছে

বাকিটা আধসেদ্ধ থিয়োরি

হেরে যাওয়া নদী

আর

মাঝখানের অপুষ্ট চড়া

 

 

শেকল বাকল

     ...........................

 

শব্দ ছুঁড়ে দিলে

অক্ষরে অক্ষরে ঝনঝন

ঔপনিবেশিক হাত পা

দড়িদড়া নিয়ে

মাস্তুলমুখো

 

এদিকে মেছো নদীর মরমীয়া

মাথা গুঁজে স্নেহময় কাদায়

পালা পেড়িয়ে, রাবণ পেড়িয়ে

উন্মুখ তারে

একাত্ম এক

এ ঘোর রজনী বাজে, সাজে

 

এ সবই বই

ম্যটিনি শো

 

গায়ে চেপেছে টমটম্ গাড়ীর ভূত

চিঁহি ডাকছে চাকা

হর্ণ তুলে জড়ো হল কবিতারা

চোখ  টিপলেন পেত্রার্কা

শুরু হল ঝলমল পেট্রোম্যাক্সে

হাংরি চুরুটের ধকধক্

 

টুংটাং শব্দে লন্ঠন বাজছে খুঁড়ে

নিভু নিভু ফিরে যাচ্ছে কবিগান

 

 

 

ফেরী

 

বেদনার দুপুর রঙে

অলিভ লেগেছে

ভেসে ভেসে অলোক ভাব

এক বিন্দু দুই বিন্দু মেঘলা বেসামাল

ছড়াতে চায়

 

দানা দানা সময় যেন নাম শুধু

দেশ কাল বদলে সে

নিজস্ব বন্দিশ....

টুপটুপ করে অপর হচ্ছে

এই জানালাও বিগত স্নানের

আজ তার সাবান শুধু পড়ে

গলে যাচ্ছে বেদনার রঙে

 

পঞ্চ্ মহলের সুর

 

কিংখাব রেখাব এসব শুনলে

আতরওয়ালার কথা মনে পড়ে

একটা ভাঙা খিলেনের ভেতর ওর আত্মা

ও দেখছে

রাণী সায়র রাণী খেলা

উর্দুর ফাঁকে জলপাই বাগান

গহন অবিশ্বাস

 

আমি এই অবিশ্বাসী  উন্নিসা দেখি

রাজ্যপাটের জেব

কখন যেন ঘর্মাক্ত দরবারে

চোখ ফুলে উঠছে

মৃত গন্ধে এই রাস্তা

গান্ধার থেকে বেরিয়ে

কোমল ছুঁয়ে

ধা আর নি এর মাঝে

অজানা নূর

 

ভুলে যাওয়া ভুলভুলাইয়া

 

 

পরবর্তী

 

একাকী রক্তের ভেতর

গান গাইত কী

চেঙ্গিসের হাড়?

যদি গাইত

তাহলে মৃত্যুকে মৃত্যু জানাত না

আমরা বোধি চিনি না

মৃত্যু চিনি

অথচ বুদ্ধের পায়ে বসে

বুদ্ধ পাবার বদলে...

আমৃত্যু নচিকেতার বদলে

অযোগ হই...

চিৎকার হই...

রক্তপাতের পর

আত্মগবেষণার   শুক্র আলো জ্বলে ওঠে

মহাজ্ঞান জাড়িত হয় গর্ভে

 

 

===

 

 

Copyright © 2016     Joyshila Guha Bagchi           Published 31st Aug, 2016.