HOMEPAGE

 

কৌরব অনলাইন ধারাবাহিক সংযোজন-১১

এপ্রিল ১০, ২০১৬

 

সূচি

   

কবিতা

ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী

 

=== 

 

 


ইন্দ্রনীল ২১-১০ এর কবি। জন্ম ১৯৭৮। লেখালেখির শুরু একুশ-দশের গোড়ায়। পেশায় গবেষক ও সহকারী অধ্যাপক । প্রথম বই মন খারাপের পর । কবিতা, অনুগল্প, অনুবাদের মাধ্যমে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়  লেখার সুত্রপাত।  কবিতার লেখার পাশাপাশি ইন্দ্রনীল একজন চলচ্চিত্র অনুরাগী। বিভিন্ন জায়গার চলচ্চিত্র  সংগ্রহ  করা তার অন্যতম শখ। নিজের কবিতা প্রসঙ্গে ইন্দ্রনীল উবাচ - যেটুকু বলা হল কবিতায় তার বাইরে আসল কবিতাটুকু রয়ে গেল।

 

 

বাতাসে কার্বনের সংখ্যা

                                                                           

()

 

বলা আছে, কোথাও যাবার নেই

তাক করে আছে অগুনতি চোখ শব্দের  আকাশে

একটি তারার জ্ব’লে যাওয়া

উজ্জ্বল কল্পরাগ, হে অমৃত , দু হাত তুলে  প্রার্থনা কর আজ।

প্রার্থনা কর মলিন হওয়া নভস্বান্ পেরিয়ে এক বিলুপ্তির ইতিহাস জেনে নেবে

বেতার সংকেতে কোন এক উজ্জ্বল চোখ ।

 

 

বাতাসে কার্বনের সংখ্যা

এক টুকরো সূক্ষ্ম,  স্থির 

বসে  যাওয়া ফুসফুসে। তোমার শ্বাস প্রণালী ।

ঝড়, বন্যা, এগিয়ে আসা সাহারা সব ছাড়িয়ে

ঘনাংকিত স্বাধীনতার তীব্র আকুতি বিন্যাস। 

 

 

()

 

তুমি আমায় বলেছ

পাড়ি দেওয়া যায় - এক হাজার বৎসর

সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যায় তিনটি অজানা শব্দ - শিশুম, শ্লিশ্ন , ঋকজ ।

জারজ গন্ধে আমরা বাঁধব সভ্যতা

বিনির্মাণ এক প্রিয় সখ্য -অস্থির হাওয়া উন্মোচন

আমি সেই পথ একবার

দেখে যেতে চাই। সেই অনুকাল, সেই দূরবর্তী , সেই সংকেত বীজ।

 

 

()

 

বাতাসে যত না নদীর ছাপ তার চেয়ে দূরবর্তী

পদাবলী। হে প্রিয় সখা, যত না বিক্ষিপ্ততা

তার চেয়ে ঘূর্ণিপাক -

সেরকম একটি ভোরে তুমি কাছাকাছি, অথচ কী অস্থির।

চল হাত ধরে সেই প্রান্তরে এসে দাঁড়াই

অনির্বাণ সেই শিখার কথা বলি - যা

জ্বলছে দীর্ঘকাল । এই যাত্রা নিরন্তর

এখন শুধু চোখে লাগে, কী অতৃপ্তি, জানি

সূর্যের দিন শেষ। তারার মত করে আর কী আছে, এই শূন্যস্থান

কিছু থেকে যাওয়া, কিছু চলে যাওয়া,

কোন এক আস্তরণ ভোরের স্বপ্ন -

আজকের পরের দিন।

 

()

 

 

এই পৃষ্ঠে এক ভঙ্গিমায়

নবদম্পতি আশায় আশায় ছল বাঁধছে। এক পুরনো চিত্র কথা ;

বাতাসে অল্প অল্প ঘনায় ভবিষ্যৎ প্রদেশ, হে মাটি

চলে যাওয়া সব কিছু ফেরত দাও

ফিরিয়ে আনো সেই ইতিহাস কথা।

দ্রাবিত যুগে বয়ে আনা সেই শব্দের ছায়া

যা আজও আশ্রয় করে শিশু ঘুমায়

নির্নিমেষ । তোমার কোলে ঘুম থেকে জেগে ওঠা এক পলক বাঁচার অভিপ্রায়-

আজ তা জন্ম দিল ধ্বংসের পরবর্তী আকাশে

নিতান্ত এক প্রমেথিউস শপথ বাক্য।

 

 

()

 

ছাদের কার্নিশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটি এ সবই জানে

জানে কি ভাবে শস্য ডানা পৃথিবীর বুক থেকে সরে গেছে। পঞ্চম মাত্রা যেখানে,

সেখানে হাতল ধরে অন্ধকার কবিতা

এপারে দাড়িয়ে,  এভাবে যদি পালিয়ে যেতে পারে।

তবু সে অলীক দেখে

দেখে উল্লাস মঞ্চ

দেখে পরিব্রাজক পূর্বপুরুষ

সময়ের অধিপৃষ্ঠের মতন  কী নিদারুণ এ পৃথিবী ও পৃথিবী বিভাজিকা।

দূরগামী সূর্যের কি অশনি তাপপ্রবাহ

নীল নিচে স্থিরচিত্র, বাসস্থান, যা সে নিজে  - আলোকবর্ষে

ইতিহাস ছাত্রের পাতায় ফসিলের স্বপ্নের মতন।


 

 

 

সিনথেটিক

 

()

 

ঘুম থেকে জেগে ওঠা সাদা বিছানা

তার সামনে রুলের সাদা খাতা,

এখানে নীল সাদা হতে গিয়ে

            ক্রমশ মিশে গেছে শেষ  বিস্ময় - 

ভালবাসার তিরন্দাজ।

যে হাওয়া চোখের ধারাল অঙ্ক

মলিন হওয়া ছাড়িয়ে-

দুরে কোন বটগাছ।

         ব্যাপ্তি, ভীষণ ব্যাপ্তি, আশ্রয়,

হাঁটা পথ শেষ না হওয়া

গাছের পাশে ক্রমশ ছোট  হতে  হতে

ছায়া আশ্রয়।

 

()

 

পড়ন্ত সব-

মেঘ ডাকছে পাথরের কাছে, নদী নদী খেলা। নদী তার

নিজের মত-ভালবাসা,

পূর্ণ কর চৌষট্টি কলা

         নদী তার অজস্র সর্বনাম, ভাসছে।

পিউ জানে কোথায় গন্ধরাজ? আকাশের গায়ে

এই পৃথিবী, ওই পৃথিবী, তিন পৃথিবীর মূলত কারিগর

ভাষা বিপ্লব। ছোঁয়া মানে? মানে তির্যক!

তীক্ষ্ণ, স্থির, দ্যুতি, লয়

         হ্যাঁ লয়, সাদা কাপড়ে জরিপের নিশ্বাস।

 

()

 

এই ব্রহ্মাণ্ডে, একটি ও তিনটি মানুষ

চোদ্দ আনা  রাত হতে চলল সবে

এবং পাখি সবশেষে একটি

            প্রজাপতির মত অথবা লুকিয়ে থাকা। নিবিড় হতে চাইছে,

খুব চাইছে ,খাঁচা থেকে খাঁচায়

              এরকম একটি রাতের অনুষ্ঠানে।

নিবিড়তা হয়তো কিছুটা জানি

কোথায় সব কিছু মিশে যায়,

এই নিবিড়তা শুধু পুনঃ পুনঃ বাঁশি শব্দ

              আটচালা বেঁধে শুয়ে পড়া সিনথেটিক।

 

 

===

Copyright © 2016     Indranil Chakrabarty     Published 10th April, 2016.